Breaking

Sunday, February 19, 2017

অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ : উপরের পেটে তীব্র ব্যথার একটি কারন



অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ : উপরের পেটে তীব্র ব্যথার একটি কারন
আমাদের পেটের উপরিভাগে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ থাকে অগ্ন্যাশয় নামে। যাকে প্যানক্রিয়াস বলা হয়। এ অঙ্গটির দুটো কাজ।
১) এটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কিছু হরমোন নিঃসরণ করে; যেমন : ইনসুলিন, গ্লুকাগন ইত্যাদি।
২) কিছু এনজাইম ক্ষরণ করে যা আমাদের খাবার হজম এবং বিপাকে সাহায্য করে।
অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহকে বলা হয় প্যানক্রিয়াটাইটিস। যে যে কারণে প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়ে থাকেঃ
১. পিত্তথলিতে পাথর (৫০-৭০%)
২. মদ্যপান
৩. ERCP নামক অপারেশানের পর
৪. হাইপারট্রাইগ্লিসারাইডেমিয়া
৫. পেটে কোনো আঘাত, ইত্যাদি।
কী কী উপসর্গ নিয়ে আসেন রোগীরা?
১. হঠাৎ করে উপরের পেটের মাঝের দিকে ব্যথা শুরু হয়। এ ব্যথার কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।
– কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যথার মাত্রা অনেক তীব্র ও মারাত্নক হয়ে যায়।
– একটানা তীব্র ব্যথা হতে থাকে। কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত এ ব্যথা থাকতে পারে।
– সাধারণ ব্যথার ওষুধে এ ব্যথা কমে না।
– ৫০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই এ ব্যথা পিঠের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
– কিছু কিছু রোগী সামনের দিকে ঝুঁকে বসলে ব্যথা কিছুটা লাঘব হয়।
– এ ব্যথাটা সাধারণত ভারী কোনো চর্বিযুক্ত আহারের পর শুরু হয়।
২. বমিবমি ভাব।
৩. বমি হওয়া।
৪. বারবার বমির উদ্রেক হওয়া।
৫. হেঁচকি ওঠা ইত্যাদি।
চিকিৎসক আপনার ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করে কী কী পেতে পারেন?
১. জণ্ডিস
২. হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
৩. শ্বাসপ্রশ্বাসের হার বেড়ে যাওয়া
৪. রক্তচাপ কমে যাওয়া
৫. জ্বর
৬. নাভির চারপাশে বা পেটের দুদিক নীলাভ রঙের হয়ে যাওয়া
৭. পেটে চাপ দিলে ব্যথা হওয়া এবং শক্ত অনুভব
৮. উপরের পেটের মাঝখানে চাকা চাকা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি।
কী কী টেস্ট করানো হয় সাধারণত?
১. রক্তে প্যানক্রিয়াস থেকে নিঃসৃত কিছু এনজাইম, সেরাম এমাইলেজ ও লাইপেজ। সাধারণ মাত্রার চেয়ে ৩-৪ গুণ বেড়ে যায় সাধারণত ।
২. রোগী যদি ব্যথা শুরু হবার ৭২ ঘণ্টা পর আসে তাহলে প্রস্রাবে এনজাইম দেখা হয়, ইউরিনারি এমাইলেজ।
৩. পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাফি
৪. পেটের সিটি স্ক্যান ইত্যাদি।
চিকিৎসা : যদি তীব্রতা কম থাকে তবে ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা যায়। তবে যদি তীব্রতা বেশি থাকে তবে HDU বা ICU -তে রোগীর চিকিৎসা করা হয়।
১. রোগীকে মুখে কিছু খেতে দেওয়া নিষেধ।
২. নাকে নল ঢুকিয়ে রাখা হয়
৩. শিরায় স্যালাইন দেওয়া হয়
৪. শিরাপথে এন্টিবায়োটিক এবং ব্যথার ওষুধ দেওয়া হয়
৫. প্রস্রাবের রাস্তায় নল বা ক্যাথেটার দেওয়া হয় প্রয়োজনে ইত্যাদি।
সাধারণ অপারেশান করা হয় না। তবে প্যানক্রিয়াটাইটিস যদি পিত্তথলির পাথরের কারণে হয়, তবে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ERCP অপারেশান করতে হয়।
প্রতিরোধে করণীয় কী?
১. মদ্যপান পরিহার করতে হবে।
২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৩. স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।


source:

No comments:

Post a Comment

আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ /Thanks for your feedback